Posts

কেমন ছিল করোনার '২০

  ১৬ই মার্চ ২০২০, ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেলো। ভাবতে পারিনি সেটির মেয়াদ এত বেশি হবে। মা-বাবার কাছে ফিরলাম না। ঢাকায় রয়ে গেলাম। প্রায় দেড়মাস পার হলো শেষে কিছুই উপায় না পেয়ে, ৭ই মে প্রাইভেট কার ভাড়া করে চলে গেলাম ভালুকায়। গিয়েছিলাম ঠিকভাবেই। বাবার বয়স ৬০+, মায়ের ৫০+। তাদের নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছিল। তাই প্রতিদিন নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করেছি, তাদের করিয়েছি। প্রতিদিন ছোটখাটো শারীরিক ব্যায়াম করিয়েছি।  জুন মাস চলছে করোনার পিকটাইম। মা ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স। প্রতিদিনই যাচ্ছেন হাসপাতালে, বাবার মেডিসিনের ব্যবসা তাকেও যেতে হচ্ছে ফার্মেসিতে। ১৭মার্চ সকালে ঘুম থেকে উঠলাম, প্রচন্ড মাথা ব্যথা। নাস্তা করলাম। বাবা আর আমি একসাথে ঘুমাই। বাবার শরীর ২-১দিন ধরে দুর্বল। আবার ঘুমালাম, ১টার দিকে উঠলাম মাথা ব্যথা কিছুটা কমেছে তবে যায়নি। শরীরটা সামান্য গরম। তখনও বুঝিনি আমার ও আমার পরিবারের জন্য কি ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। দুপুরের পর বাবার আসলো ভারি জ্বর। আমারও সামান্য জ্বর জ্বর লাগছে। বিকেল গড়িয়ে গেলে বাবার জ্বরটা একটু কমলো। বাবা দোকানে গেলো। রাতে দ্রুতই ফিরে এল। তবে সেই রাতেই (১৮ই জুন দিবা...

আমাকেও ভুলে যাবে। (Alzheimer's)

- রুদ্র? রুদ্র...... (ঘুম থেকে ডেকে তোলা হচ্ছে তাকে) - হুম বলো। - উফফ ওঠো। কথা আছে। - না, প্রতিদিনই উঠাও কিন্তু হাবিজাবি কথা বলে সময় পার করে দাও। - ওহ আমি হাবিজাবি কথা বলি। চোখ ঘষতে ঘষতে উঠে বসল রুদ্র। - আমি বলিনি সব কথা তুমি উল্টা পাল্টা। কিন্তু তুমি আমাকে কেনো ডেকে তোলো সেটা আমি জানি। (মাথা নিচু করে রইল অন্তু ) অন্তুর উরুর ওপর নিজের মাথাটা রেখে রুদ্র বলল, তোমার কনফিডেন্স যেদিন আসবে সেদিন তুমি আমাকে বল। - আমি তো চাই কিন্তু আমার অনেক ভয় হয়। আর তুমি তো কোন ডল না, তোমারও ইমোশন আছে। আমি যেদিন চাইব সেদিন তোমার জন্যও সম্ভব হবে এমন তো না। - সত্যি একটা কথা বল তো? - হ্যাঁ বলো? - আমাদের বিয়ের ২মাস হয়েছে, আমরা এখনো কিছু করিনি। কারণ তুমি চাওনি। কিন্তু যখন তোমার ইচ্ছে হয় তখনও তুমি এভাবে avoid কর কেন? - জানি না। - তুমি বলেছো সত্যি বলবে। - এটা কিভাবে বলবো আমি? - তুমি যে কি লুকাচ্ছো আমি সেটাই বুঝতে পারছি না। - আচ্ছা আমাদের সম্পর্ক ছিল ৪বছর, রাইট? তারপর বিয়ে করেছি। - হ্যাঁ। - তুমি আমাকে অনেক ভালবাসো। আমিও বাসি। - হুম। - আমি ভয় পাই তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাও যদি। - কেন আমি তোমাকে ছেড়...

মেয়েটিকে চিনি না

২৮ পেরিয়েছি। একটা ভাল চাকুরী করি। এই শহরেই আছি ২৫বছর ধরে। বাবা-মা সাথেই থাকেন। আজকাল আমার জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। আমার পছন্দ ছিল একটা সময়, ৪বছর হয়ে গেছে সম্পর্ক নেই। এখনো খোঁজ রাখি, সে বিয়ে করে নিয়েছে। অনেকটা সময় ছিলাম সম্পর্কে, কিন্তু ভাল সময় সেই কিছুদিনই থাকে পরে সেটা বিভিন্ন রূপ পালটে বোঝা পরায় চলে আসে। আলাদা ইউনিভার্সিটি আলাদা রুটিন, অনেক কিছু মানিয়ে নিয়েই চলতে হয়েছে। ইউনিভার্সিটির শেষ বছরে আর কুলিয়ে উঠতে পারিনি। শেষে মেনে নিয়েছি। গত ৩বছরে চাকুরী আর নিজের জন্য কিছু করা এর মাঝেই সময় কেটে গেছে, বন্ধুদের আড্ডায় সময়ও খারাপ কাটে না। আমার এখন আর পছন্দ বলে আহামরি কিছু নেই। সব ভালো হলে, বাবা-মায়ের পছন্দ হলে, আমার মানা নেই। অফিসের জন্য বের হচ্ছি। মা দরজা লাগাতে আসলো। - শুভ্র, আজকে দুপুরে আসবি। আমরা কিন্তু মেয়ে দেখতে যাবো। - মা বলল। - আচ্ছা। একটা কাজ করো না? - হ্যাঁ বল। - মামাকে সাথে নাও। আমি গাড়িটা রেখে যাই, তোমরা আমাকে নিয়ে নিও অফিসের সামনে থেকে। তাহলে আমার অপেক্ষায় তোমাদের বসে থাকতে হবে না। - আচ্ছা ঠিক আছে। মেয়ের বাড়ি পুরান ঢাকা। তবে এরা এখানের স্থানীয় না। আমার কাছে কথা বলার খুব এক...

রূপ

চোখে তোমার অশ্রু , সে তো শুধু অভিনয়। মেয়ে, তোমায় দেখলে, মনে ধরে বড়  ভয়। বাম হাতে তোমার গোলাপ ফুল সাথে দিয়েছো কাটা , ডান হাতে লিখেছো তুমি আমার মরণ গাঁথা । মুখে তোমার মধুর বচন, নিয়ত দিয়েছ সাজা, ঈশ্বরও যে ভেবে ব্যাকুল, কেন কঠিন নারীকে বোঝা? তুমিই দেখাও সুখের আশা, নিজেই ভাঙো স্বপ্ন, নিজের স্বার্থে সর্বনাশা, তবে মিথ্যে কি সব যত্ন ? তোমার প্রেমেতে অঙ্গার হয়ে শুনি তোমার নূপুরের ঝংকার এই লাগলাম মনের দরজা, কেউ পার হবে না আর এই দ্বার ।

জেলখানা ও ভালবাসার কথা

বলতে বলতে থেমে যাই, চোখের দিকে কেন তাকাই? তোকে হাজার কথার মাঝে, হাজার কাজের ফাঁকে, তোর ছোঁয়াটা খুঁজে পাই। মিষ্টি কথায় হাঁসাতাম তোকে দুষ্টু কথায় জ্বালাতাম তোকে। হাজার লোকের মাঝে থেকে খোলা জানালার পাশে বসে, কে বল তোকে আমার মতন ভালবাসে? সনপাপরি পছন্দ তোর আটকাবো যে কোথায় সে জোর। বলতে বলতে থেমে যাই, চোখের দিকে কেন তাকাই? আমি জানি পাশে তুই নাই। নতুন বাড়ির ঠিকানা আমি জানি না তবু তোর মনের শেষ সীমানা আমার ঠিকানা। তোর বারান্দার পাখিগুলো একদিন কেড়ে নেবো, যেদিন তোকে মনের জেল থেকে মুক্ত করে দেবো। এই জেলের চার দেয়ালে ভালো লাগে না তোর ছবিটা থাকলে পরে জেলখানা আর জেলখানা হত না। বলতে বলতে থেমে যাই, তোর চোখের দিকে কেন তাকাই? জানি আমি পাশে তুই নাই। ক্ষমা করিস ওরে পাখি, যতই হাঁসাই তোরে ততই কাঁদাই। আমার কথা পড়লে মনে, শুকনো ফুলের গন্ধ নিবি, তোকে নিয়ে যুদ্ধ হলে সবার সামনে আমায় পাবি। কখনো যদি মনে হয়, এই শরীরে আমি নাই, ধরে নিবি মরে গেছি অনেক দুরে চলে গেছি। তোর পায়ের ওই পায়েল বাজে মৃত দিনের সন্ধ্যা সাজে, বন্ধ ঘরে দীর্ঘশ্বাঃসে আমার দেহে রক্ত নাচে তবু তোকে ছোঁবো না, এই শেষবার প্...

ভালবাসতে ভুলে গিয়েছি

                                     ভালবাসতে ভুলে গিয়েছি                                                         -মলয় বাড়ৈ                                      আমার কষ্টগুলো পথ হারিয়েছে                                      হয়ত ভালবাসতে ভুল গিয়েছি তাই।                                      তোমার মায়াতে আর টান ধরে না,                                      কমেছে ছুঁয়ে দেখার অভিপ্রা...

শেষ চিঠি

                                                              শেষ চিঠি                                                                         - মলয় বাড়ৈ                                              তোমাকে লেখা এটাই আমার শেষ চিঠি                                             তোমার জিজ্ঞাসু মনে প্রশ্ন তখন, কেন কেন কেন ?                                 ...